সংবাদ শিরোনামঃ
শ্যামনগরে ভ্যান ইজিবাইক চালকদের সচেতনতায় ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্পেইন  শ্যামনগরে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ফেমিনিস্ট ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত শ্যামনগরের ছদ্দবেশী বোরকা পরিহিত এক পুরুষ আটক শ্যামনগরে নৌকার প্রার্থী দোলনকে গণসংবর্ধনা জামায়াত অধ্যুষিত সংসদীয় আসনে শক্ত অবস্থান জগলুল হায়দারের শিশুশ্রম সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন ও করনীয় বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত এমপি জগলুল হায়দারের নির্দেশনায় শ্যামনগরে হরতাল বিরোধী মিছিল ও শান্তি সমাবেশ সাতক্ষীরায় উত্তরণ এর আয়োজনে SIDA2GROW প্রকল্পের তৃণমূল পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে উত্তরণ এর আয়োজনে SIDA2GROW প্রকল্পের তৃণমূল পর্যায়ের সভা উত্তরণ এর আয়োজনে SIDA2GROW প্রকল্পের তৃণমূল পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত
শতাব্দী পেরিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

শতাব্দী পেরিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেজেছে নতুন সাজে।

অঙ্কের হিসাবে শতক পার। দীর্ঘ এ সময়ে এসে সমালোচনার সঙ্গে অর্জনও রয়েছে অনেক। তবুও নিজস্ব আলোয় আলোকিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বময় উদ্ভাসিত। এখনো নিজস্ব গৌরব ও ঐতিহ্যে গৌরবান্বিত। বিশ্বদরবারে অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার খ্যাতিও রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

দেশ মাতৃকাকে দায়ী করে রেখেছে জন্মলগ্ন থেকেই। পৃথিবীর মানচিত্রে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের সবুজ শ্যামল ভূখণ্ডটির জন্মের পেছনেও একক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠানটির। এমন প্রতিষ্ঠান আর খুঁজে পাওয়া যায় না, যেটি একটি জাতির ভাষার অধিকার থেকে শুরু করে স্বাধীনতা এনে দেয়া পর্যন্ত সব জায়গায় ছিল নেতৃত্বের অগ্রভাগে। শুধু কি তাই, স্বাধীনতার পরেও যখনই হুমকিতে পড়েছে লাল সবুজের পতাকা তখনই ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছে এই বিদ্যাপীঠের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) প্রাচ্যের বাতিঘর হিসেবে খ্যাত, দেশের ষোলো কোটি মানুষের স্বপ্নের জায়গা হিসেবে চিহ্নিত এবং দেশসেরা বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শততম প্রতিষ্ঠাার্ষিকী।

বঙ্গভঙ্গ রদের পর পূর্ব বাংলার পিছিয়ে পড়া মানুষদের উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন ঢাকার নবাব পরিবার। বৃটিশ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন তৎকালীন পূর্ব বাংলার জমিদার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ও শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক। তাদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে লর্ড হার্ডিঞ্জের নির্দেশে ১৯১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যারিস্টার রবার্ট নাথানের নেতৃত্বে নাথান কমিটি গঠন করা হয়। সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে ৬০০ একর জমি নিয়ে বিশাল তরুছায়া সুনিবিড় পরিবেশে যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

যদিও এখন জমির পরিমান কমতে কমতে এর আয়তন দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৬০ একরে। বৃটিশরা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে এর পঠন-পাঠন ও শিক্ষাদান কার্যক্রম পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন বলেই এটিকে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হতো। এরপর থেকেই জ্ঞান-বিজ্ঞান ও বিদ্যাচর্চার খ্যাতিতে এই উপমহাদেশের একটি শ্রেষ্ঠ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষাদান, বিদ্যাচর্চা, শিক্ষকদের গবেষণা ও পাণ্ডিত্যের খ্যাতি শুধু এ উপমহাদেশে নয়, অর্জনের প্রভাব পড়ে পূর্ব বাংলা পেরিয়ে ইউরোপ, আমেরিকাসহ নানা দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও।

বিশ্ববিদ্যালয়টির আবাসিক ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল উপমহাদেশের প্রাচীনতম এবং তৎকালীন শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান ভারতের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে। উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবেন, পাঠ নেবেন ও জ্ঞানার্জনের নানা প্রয়োজনে লাইব্রেরিসহ শিক্ষকের সাহচর্য লাভ করবেন।

জাতীয় জীবনে এ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের অর্জন অনেক হলেও বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়ায় বেশে কয়েকবছর ধরেই প্রশ্ন উঠেছে এর একাডেমিক ভূমিকা নিয়ে। এমনকি এ কারণে সমালোচনাও কম হচ্ছে না। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিবারই বলে আসছেন, সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ অর্জনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে গবেষণায় পিছিয়ে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ শতবর্ষে এসেও গবেষণায় বরাদ্দ বাজেটের মাত্র ১.৩৭ শতাংশ।

প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে মাত্র তিনটি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, ৬০ জন শিক্ষক আর ৮৭৭ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলো ঢাবি। বর্তমানে ১৩টি অনুষদ, ৮৩টি বিভাগ, ১১টি ইনস্টিটিউট, ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল, ৫১টি গবেষণা কেন্দ্র ও ব্যুরো, শতাধিক অধিভুক্ত কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ৩৭ হাজার শিক্ষার্থী ও ১ হাজার ৯৯২ জন শিক্ষক রয়েছেন।

এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণিলভাবে শতবর্ষ উদযাপনের কথা থাকলেও বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে তা আপাতত বাতিল করা হয়েছে। সীমিত পরিসরে শিক্ষার্থী ছাড়া এক মলিন শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান বুধবার (৩০ জুন) উদ্বোধন করা হয়েছে। বন্ধ ক্যাম্পাসে আলোকসজ্জা করা হলেও যেন কাঁদছে আবাসিক হল ও একাডেমিক ভবনগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয়টির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অ্যালামনাই ফ্লোর চত্বরে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করা হয়। পরে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম মুকুলের সঞ্চালনায় ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। আরো ছিলেন, সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার, কার্যনিবার্হী কমিটির সদস্য মাহবুব হোসেন, এড. আফজাল হোসেন প্রমুখ।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, শতবর্ষপূর্তির মূল অনুষ্ঠান বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে আগামী ১ নভেম্বর পালন করা হবে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: আপনি নিউজ কপি করার চেষ্টা করছেন। অনুগ্রহ করে এডমিনের সাথে যোগাযোগ করুন। Power By- Sundarban IT Limited